বড়লেখা প্রতিনিধি :: এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকির সৌন্দর্য উপভোগের জন্য পর্যটক টানতে এখানকার হাল্লা পাখিবাড়ির (বঙ্গবন্ধু পুরস্কারপ্রাপ্ত) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও হাওর কেন্দ্রিক ইকোট্যুরিজমের উন্নয়নে ১০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে এই উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি।

 

জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে কাজটি ২ বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। এ উপলক্ষে হাল্লা এলাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রকল্প পরিচালক এবং মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় তালিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এখলাছুর রহমান, তালিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস প্রমুখ।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ইকোট্যুরিজম উন্নয়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞবদ্ধ হয়ে কাজ করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫ শতাংশ ভূমি বৃক্ষাচ্ছাদনের আওতায় আনার লক্ষ্যে দেশব্যাপী ব্যাপকভাবে গাছ লাগানো হচ্ছে। মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য বন সৃষ্টি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার কোনো বিকল্প নাই। তাই সবার জন্য একটা স্বাস্থ্যকর দেশ গড়তে সবাইকে গাছ লাগিয়ে তার যত্ন করতে হবে।’

 

হাকালুকি হাওরে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ইকোট্যুরিজম প্রকল্পের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘হাকালুকি হাওরে পরিবেশবান্ধব ইকোট্যুরিজম এখানকার পর্যটনে গতি আনবে। স্থানীয় অনেক মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে। বাড়বে রাজস্ব।’

 

মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে- পাখিদের বাসা বাঁধা, বিশ্রাম উপযোগী গাছ-পালার সংরক্ষণ ও হাওরের পরিবেশের সাথে অভিযোজিত উদ্ভিদ প্রজাতির বনায়ন সৃজনের মাধ্যমে আবাসস্থলের উন্নয়ন ও প্রাকৃতিক পুনর্জন্মের সুরক্ষা করা। পাখি সংরক্ষণ সম্পর্কিত গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগনের সচেতনতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ। ইকোট্যুরিজম পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় স্থাপনাসহ সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিকরা ও বিকাশ সাধন। পাখিবাড়ি সংলগ্ন হাওরের উপর নির্ভরশীল স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকা নির্বাহের জন্য এআইজি কার্যক্রমের সহাযতায় স্থানীয় সম্প্রদায়ের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। স্থানীয় জনগণের দক্ষতা উন্নয়ন ও স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহনের মাধ্যমে হাকালুকি হাওরের পাখিকূলের দীর্ঘমেয়াদী আবাসস্থল সংরক্ষণ।

 

অন্যদিকে ইকোট্যুরিজম উন্নয়নে পর্যটকদের জন্য আবাসিক রুম, রিসিপশন, সভা ও প্রশিক্ষণ কক্ষ, কিচেন ও ইনিং সম্বলিত তিন তলা বিশিষ্ট রিসোর্ট, পুরুষ ও নারীদের জন্য শৌচাগার, দুটি নন্দন প্রবেশ গেট, ফুট ট্রেইল, সাবমারসিবল ওয়াকিং ট্রেইল, আর সিসি বসার বেঞ্চ, দিক নির্দেশনামূলক সাইনেজ স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি এখানে জেটি, ইঞ্জিন চালিত ফাইবার বডি বোট, পর্যটকদের লেকে চলাচলের জন্য প্যাডেল বোট থাকবে।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *