ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: সিলেট-১ আসনে দল তাঁকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিতে চাইলেও তিনি তা গ্রহণ করেননি। আবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁর দল জাতীয় পার্টির এখনো চূড়ান্ত সমঝোতা না হলেও সিলেট-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে থাকার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে ফের আলোচনায় সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও সদ্যঃসমাপ্ত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। তিনি বলেছেন, ‘এমন সিদ্ধান্তে দল বহিষ্কার করলেও কিছু যায়-আসে না।’
বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সিলেট নগরের গোটাটিকরে নজরুল ইসলাম বাবুলের ব্যাবসায়িক কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎ শেষে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. মোমেনের সঙ্গে থাকার ঘোষণা দিয়ে বাবুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পরিবার একটি অভিজাত পরিবার। তাঁর ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম আবুল মাল আব্দুল মুহিত সিলেটের উন্নয়নে অনেক কিছু করেছেন। তিনিও (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন সিলেটের জন্য। এ অবস্থায় সিলেট-১ আসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাকে আমি উচিত মনে করিনি। তাই দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’
এমন সিদ্ধান্তে দল তাঁকে বহিষ্কার করলেও তাতে কিছু যায়-আসে না মন্তব্য করে এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি পদের লোভে রাজনীতি করি না।’ এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন তাঁর পাশে ছিলেন। বাবুলের এই ‘ত্যাগে’র কারণে তাঁকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাতে তাঁর কার্যালয়ে এসেছেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এই মানুষটির (বাবুল) সঙ্গে আমার কোনো সখ্য নেই।
নির্বাচন বিষয়েও কোনো আলাপ হয়নি। কিন্তু একটি ভিডিও দেখে তাঁর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতাবোধ তৈরি হলো। আমার জন্য তিনি দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে সিলেট-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তাই আমার মনে হলো, তাঁর সঙ্গে একবার দেখা করে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানানো দরকার।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘তিনি (বাবুল) সদ্য অনুষ্ঠিত সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে দাঁড়িয়ে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ৬০ হাজার ভোট পেয়েছেন। সেটি কম কথা নয়। তিনি চাইলেই সিলেট-১ আসনে আমার বিরুদ্ধে লড়তে পারতেন। কিন্তু আমার জন্য সরে দাঁড়িয়েছেন, মনে হয়েছে তাঁর অন্তরটা বিশাল। তাঁর এই ছাড় দেওয়া সিলেটের সম্প্রতির রাজনীতির একটি অনন্য উদাহরণ।’
ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বাবুল সদ্যঃসমাপ্ত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রতীকে লড়ে প্রায় ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন। বিজয়ী প্রার্থী আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এক লাখ ১৯ হাজার ৯৯১ ভোট। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সিলেট-৩ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দল তাঁকে সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন দেয়। দলের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।