ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ঘুষ লেদেনের মামলার প্রধান আসামি ও বাংলাদেশ নার্সিং অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেককে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। এরআগে দীর্ঘদিন থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।

 

রবিবার (৩ মার্চ) সিলেট অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিতে চাইলে আদালতের বিচারক নুরে আলম ভূইয়া তার আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের লামাবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক রাশেদ ফজল।

 

তিনি বলেন, ছাদেক গত ২৩ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে এ মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। তার জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

উল্লেখ্য, গত ৯ জানুয়ারি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘুষ লেনদেনের সময় নগদ টাকাসহ দুই নার্সকে আটক করা হয়। এসময় ঘটনার মূল অভিযুক্ত নার্সিং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেক পালিয়ে যান। এঘটনার দিন রাতেই হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হানিফ সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স (ব্রাদার) ইসরাইল আলী সাদককে প্রধান আসামি করা হয়।

 

মামলার আসামি করা হয় একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মো. আমিনুল ইসলাম (৪৫) ও সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমন চন্দ্র দেব (৪১) কে। এরপর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন সাদেক।

 

এ মামলায় ইসরাইল আলী সাদেক গত ২৩ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন। রোববার তিনি নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

জানা গেছে, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গীতা রাণী হালদার নামের এক সিনিয়র স্টাফ নার্সকে ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর অসদাচরণের অভিযোগে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর ৮ বছর পর ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে গীতা রাণীকে চাকরিতে বহাল করা হয়। চাকরিতে বহালের ১ বছর পেরিয়ে গেলেও নার্স গীতা রাণী হালদার তার বরখাস্ত থাকাকালীন বকেয়া বেতন ৩৪ লাখ ১০ হাজার ৫৬ টাকা পাননি।

 

গত বছরের শেষের দিকে একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ইসরাইল আলী সাদেক ওই বকেয়া বিল পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে গীতা রাণী হালদারের কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।

 

সাদেকের এই প্রস্তাবে গীতা রাণী হালদার রাজি হন এবং তার কথামতো গত ৯ জানুয়ারি ওসমানী হাসপাতালের আরেক স্টাফ নার্স আমিনুলের কাছে ৬ লাখ টাকা দেন।

 

এদিকে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওইদিন হাসপাতালে অভিযান চালায় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এ সময় ৬ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে আটক হন নার্স আমিনুল ইসলাম। তার দেওয়া তথ্যমতে সুমন চন্দ্র দেবকেও আটক করা হয়। কিন্তু এ সময় পালিয়ে যান ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ইসরাইল আলী সাদেক।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *