ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: ভূমিকম্পপ্রবণ হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। মাঝেমধ্যেই ছোট ও মাঝারি মাত্রার ভূকম্পনে কেঁপে উঠছে দেশ। এসব ভূমিকম্পে তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও সামনে বড় মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সাম্প্রতিককালে একটির পর একটি স্বল্পমাত্রার ভূকম্পনের আঘাত ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। কোনো পূর্বাভাসের ব্যবস্থা না থাকায় মানুষের উদ্বেগ বাড়ছে। গত ১০ দিনে চার দফা ছোট থেকে মাঝারি আকারের যে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, প্রায় প্রতিটিরই উৎপত্তিস্থল ছিল দেশের সীমানার ভেতর বা আশপাশে।

গতকাল বুধবারও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা কেঁপে উঠে ভূমিকম্পে। বেলা ১১টা ৩৬ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পটির রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৫.৬। ভূমিকম্পে তাৎক্ষনিকভাবে কোনো ক্ষতির তথ্য মেলেনি। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ভারতের মণিপুরের রাজধানী ইম্ফ‌লের ইয়ারিপক এলাকা। ভূমিকম্পটির গভীরতা ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের কর্মকর্তা মো. রুবায়েত কবীর জানান, ঢাকা থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৪৪৯ কিলোমিটার। ভূমিকম্পে ঢাকা ছাড়াও গাজীপুর, চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সিলেটসহ বেশ কয়েকটি স্থানে কম্পন টের পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গত ১০ দিনে দেশে চার বার ভূমিকম্প অনুভূত হলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তনের কারণে এসব সিসমিক কর্মকাণ্ড ঘটছে, যা স্বাভাবিক হলেও তাতে জনমনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রতিটি ভূমিকম্পের পর নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সিসমিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এসব ভূমিকম্প দেশের ভূতাত্ত্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত। তারা আরও বলেন, ভূমিকম্পের মাত্রা কম হলেও এর পরিণতি হতে পারে বড়, তাই নাগরিকদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এবং কাছাকাছি এলাকায় ২৮টি ভূমিকম্প হয়। ২০২৩ সালে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১টি এবং গত বছর ২০২৪ সালে দেশে ও আশপাশে ৫৩টি ভূমিকম্প হয়েছে। এটি ছিল আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *