ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্মুখ লড়াইয়ে নেমেছে বিশ্বর অন্যতম শীর্ষ বিদ্যাপীঠ হার্ভার্ড ইউনিভার্সি। হোয়াইট হাউসের সামনে মাথা নোয়াতে নারাজ এই বিশ্ববিদ্যালয়।

 

সম্প্রতি হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ ২৩০ কোটি ডলারের ফেডেরাল ফান্ডিং স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ৬ কোটি ডলারের চুক্তিও স্থগিত। তাতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রিমোট হোয়াইট হাউসের হাতে তুলে দিতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সরাসরি ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই বিশ্বের এই অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় এখন সোশ্যাল ট্রেন্ডে।

 

এর আগে গত মাসে, ইসরাইল-গাজা যুদ্ধবিরোধী ও ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে, ক্যাম্পাসে উদ্ভূত কথিত ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলার অংশ হিসেবে হার্ভার্ডের ৯ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান ও চুক্তি পর্যালোচনার ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন।

 

আলোচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে এমন একাধিক তথ্য রয়েছে যা শুনলে আপনি অবাক হবেন।

 

১৬৩৬ সালে ক্যামব্রিজের ম্যাসাচুসেটসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। আমেরিকার প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই বিশ্ববিদ্যালয়। ৫ হাজার ৪৫৭ একর জমির ওপর তৈরি হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। ভিতরে যা জায়গা আছে, তাতে চার হাজার ফুটবল মাঠ করা যাবে। তবে সব থেকে আকর্ষণীয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি। শুধু তাই নয়, এই লাইব্রেরির সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে আইকনিক জাহাজ টাইটানিকের।

 

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম লাইব্রেরিগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং এটি বিশ্বের বৃহত্তম একাডেমিক লাইব্রেরি। ১৬৩৮ সালে জন হার্ভার্ডের দান করা ২৬০টি বইয়ের মাধ্যমে এই লাইব্রেরির যাত্রা শুরু হয়েছিল। বর্তমানে এই লাইব্রেরিতে প্রায় ২০ মিলিয়ন ভলিউম, ৪০০ মিলিয়ন পান্ডুলিপি, ১০ মিলিয়ন ফটোগ্রাফ এবং ১ মিলিয়ন মানচিত্র রয়েছে।

 

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মোট ৭৯টা লাইব্রেরি। এর মধ্যে সব থেকে বড় এবং জনপ্রিয় ‘ওয়াইডনার মেমোরিয়াল লাইব্রেরি’। হার্ভার্ডের শিক্ষার্থী ওয়াইডনার ছিলেন টাইটানিক জাহাজের অন্যতম যাত্রী। ১৯০৭ সালে হাভার্ড থেকে পাশ করেছিলেন তিনি। বই পড়া আর বই সংগ্রহ করার অদ্ভূত নেশা ছিল তার। আধুনিক বইয়ের বিপুল সংগ্রহ ছিল তার কাছে। টাইটানিক জাহাজের প্রথম সফরে ওয়াইডনারের সঙ্গে ছিলেন তার বাবা, মা ও গোটা পরিবার।

 

আটলান্টিকের বরফশীতল পানিতে টাইটানিকের সঙ্গেই সলিল সমাধি হয়েছিল তার। কোনো মতে রক্ষা পেয়েছিলেন তার মা। ১৯১৫ সালে ওয়াইডনারের বিপুল বইয়ের ভাণ্ডার বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করেছিলেন তিনি। সেই সময়ই এই লাইব্রেরির নাম বদলে হয়েছিল ওয়াইডনার মেমোরিয়াল লাইব্রেরি।

 

১০০টিরও বেশি ভাষার প্রায় ৩৫ লক্ষ বই রয়েছে এখানে। লাইব্রেরিটির ফ্লোরের সংখ্যাই ১০টি। হার্ভার্ডের ইতিহাস বলে, প্রথমে লাইব্রেরিটি ছিল ছয় তলার। কিন্তু একটা সময় বইয়ের সংখ্যা এতটাই বেড়ে যায় যে, নতুন বইগুলোকে জায়গা দিতে মাটির নীচে আরও চারটা ফ্লোর তৈরি করতে হয়েছিল। আর বইয়ের তাক ধরে হাঁটা লাগলে প্রায় ৯২ কিলোমিটার পথ হাঁটতে হবে আপনাকে।

 

মজা করে বলা হয়, এই লাইব্রেরিতে ঘুরতে কম্পাস লাগে। না হলে কেউ হারিয়ে যেতে পারে।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *