ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: দখলদার ইসরাইলের রাজধানী তেলআবিবে শনিবার হাজার হাজার ইসরাইলি বিক্ষোভ করেছে। তারা গাজা উপত্যকায় হামাসের হাতে আটক ইসরাইলিদের মুক্তির দাবিতে গাজায় আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে একটি ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি চুক্তির’ আওতায় সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।

 

ইসরাইলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা একটি ‘পূর্ণাঙ্গ ও পক্ষপাতহীন চুক্তি’ দাবি করেছে, যাতে গাজায় আটক সব বন্দি—জীবিত বা মৃত—মুক্তি পায়।

 

তেলআবিবের বিক্ষোভে বহু বন্দির পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন। তারা যে কোনো অস্থায়ী বা আংশিক চুক্তির বিরোধিতা করে স্লোগান দেন। কারণ, তারা আবারও অল্পসংখ্যক বন্দির মুক্তি দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।

 

এ সময় সমাবেশে অনেক বন্দিদের আত্মীয়-স্বজনই বক্তৃতা দেন এবং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে আহ্বান জানান, যেন কোনো বিলম্ব ছাড়াই একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তিতে উপনীত হওয়া যায়।

 

এদিকে তেলআবিবের এই বিক্ষোভের সময়েই ইসরাইল সরকার ঘোষণা দেয় যে, তারা কাতারের রাজধানী দোহাতে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে সম্মতি দিয়েছে। যারা গাজায় হামাসের সঙ্গে একটি বন্দি বিনিময় চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবে। কারণ, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের পক্ষ থেকে ‘ইতিবাচক’ প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

 

ইসরাইলের সরকারি সম্প্রচার সংস্থা কেএএন জানিয়েছে, মধ্যস্থতাকারীরা আশাবাদী যে, দুই পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য দূর করে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।

 

হিব্রু ভাষার পত্রিকা হারেৎজের খবরে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু রোববার সকালে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন। সেখানে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

 

ইসরাইলি সরকারের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় বর্তমানে ৫০ জন বন্দি রয়েছেন। যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত। অপরদিকে, ইসরাইলি কারাগারে ১০,৪০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন, যারা নানাবিধ নির্যাতন, অনাহার এবং চিকিৎসা অবহেলার শিকার।যার ফলে ইতোমধ্যেই অনেক বন্দি মারা গেছেন বলে ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে।

 

আন্তর্জাতিকভাবে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও ইসরাইল গত ২২ মাস ধরে গাজায় এক ধ্বংসাত্মক ও গণহত্যামূলক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে অব্যাহত এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫৭,৪০০-র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

 

এছাড়াও, গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

 

এদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি গণহত্যা মামলা চলমান রয়েছে।সূত্র: আনাদোলু।

 

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *