ডায়াল সিলেট ডেকস
বাংলাদেশ পুরুষদের জাতীয় দল যেখানে ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে যাত্রা শুরু করেছিল, সেখানে নারী দল অপেক্ষা করেছে আরও ৩৭ বছর। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় সাফ নারী ফুটবলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রেখেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ছেলেদের চেয়ে অনেক দেরিতে সূচনার পরও নারীরা যা করেছেন, তা সোনালি অক্ষরে লেখার মতো। পুরুষ ফুটবলের অর্জনের খাতা যদি হয় বিবর্ণ, নারীদের খাতা অনেক উজ্জ্বল।
একই দেশের পতাকা নিয়ে মাঠে নামে দুই দল। ঘাম ঝরায়, জয়ের জন্য লড়াই করে। কিন্তু তারপরও দুই দলের পথ পুরোপুরি আলাদা। একদল হাঁটে লাল কার্পেট বিছানো রাস্তায়, অন্য দল কাঁটা বিছানো পথে। বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী ফুটবল দল যেন বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে। যেখানে পুরুষদের জন্য সুবিধা ও সমর্থনের ছড়াছড়ি। তুলনায় নারীরা পান না বলার মতো তেমন কিছু। নারীদের পথচলা বৈষম্য আর অবহেলার বিরুদ্ধে।অল্প সময় আর সীমিত সুযোগের পরও বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল পুরুষদের চেয়ে কতটা এগিয়ে গেছে, তা পরিসংখ্যানই বলে দেয়।
২০১০ সালে শুরুর পর ২০২৫ সালের এই জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ নারী দল খেলেছে ফিফা–স্বীকৃত ৭০টি ম্যাচ। এর মধ্যে জয় এসেছে ২৮টিতে। জয়ের হার শতকরা ৪০। হার ৩১টি, ড্র ১১টি। অন্যদিকে ২০১০ থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত ১৫ বছরে পুরুষ দল খেলেছে ১২৭টি ফিফা–স্বীকৃত ম্যাচ। জয় মাত্র ৩৫টি। শতকরা জয়ের হার ২৭। হার ৬২টি, ড্র ৩০টি।
বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবল দলের আন্তর্জাতিক সাফল্যের তালিকা খুব দীর্ঘ নয়। একমাত্র এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছিল ১৯৮০ সালে, কুয়েতে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে। এরপর কেটে গেছে ৪৫ বছর, কিন্তু আর কখনো এশিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদার এই আসরে খেলা হয়নি বাংলাদেশের। আন্তর্জাতিক ট্রফির জন্য অপেক্ষাটা দীর্ঘই ছিল। সেই অপেক্ষা খানিকটা ঘোচে ১৯৯৫ সালে, মিয়ানমারে চার জাতি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়ের মাধ্যমে। এটি ছিল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের প্রথম শিরোপা।
এর চার বছর পর ১৯৯৯ সালে কাঠমান্ডুতে সাফ গেমসে প্রথমবারের মতো সোনার পদক জেতে বাংলাদেশ। ওই জয় নতুন স্বপ্ন দেখায় দেশের ফুটবলপ্রেমীদের। সেই ধারাবাহিকতায় ২০০৩ সালে ঘরের মাঠে আয়োজিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয় লাল-সবুজের দল। এটি ছিল দেশের পুরুষ ফুটবলের সবচেয়ে বড় অর্জনগুলোর একটি।