ডায়ালসিলেট ডেস্ক:: সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ব্যক্তি যা গ্রহণ করেছে তা ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত দায় থেকে যাবে।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩৫৬১)

আলোচ্য হাদিসে মহানবী (সা.) মানুষের প্রাপ্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। মানুষ কারো সম্পদ হস্তগত করলে তা ফিরিয়ে দেওয়া তার দায়িত্ব। মানুষের হক আদায় না করলে আল্লাহ পরকালে ক্ষমা করবেন না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমানত তার অধিকারীদের ফিরিয়ে দিতে আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৫৮)

 

 

সব ধরনের প্রাপ্যই বুঝিয়ে দিতে হবে : হাদিসে ন্যায় ও অন্যায় উভয় প্রকার গ্রহণই উদ্দেশ্য। সুতরাং কেউ যদি ন্যায়সংগতভাবে কারো সম্পদ গ্রহণ করে তা ফিরিয়ে দিতে হবে। যেমন কারো কাছ থেকে ঋণ নেওয়া, কোনো স্থাপনা বা ব্যবহারের বস্তু ভাড়া নেওয়া এবং কারো কোনো সম্পদ বন্ধক রাখা। একইভাবে অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ আত্মসাৎ করলেও তা ফিরিয়ে দিতে হবে। যেমন—চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, প্রতারণা, ঘুষ ও সুদ। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না; কিন্তু তোমাদের পরস্পর সন্তুষ্টির সঙ্গে ব্যবসা করা বৈধ।’ (সুরা : নিসা,  আয়াত : ২৯)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যের এক বিঘত পরিমাণ জমিন জবরদখল করে কিয়ামতের দিন তার ঘাড়ে সাত তবক জমিন ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৪৫৩)

ঋণ পরিশোধের তাগিদ : ইসলাম মানুষের সহযোগিতায় যেমন ঋণ প্রদানে উৎসাহিত করেছে, তেমনি ঋণগ্রহীতাকে সময়মতো তা পরিশোধের নির্দেশও দিয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের সম্পদ গ্রহণ করে (ঋণ নেয়) তা পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন। আর যে তা নেয় বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাকে ধ্বংস করে দেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৩৮৭)

তাগাদা দিতে পারবে ঋণদাতা : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘জনৈক ব্যক্তি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে তার পাওনা আদায়ের কড়া তাগাদা দিল। সাহাবিরা তাকে শায়েস্তা করতে উদ্যত হলে তিনি (নবীজি) বললেন, তাকে ছেড়ে দাও। কেননা পাওনাদারের কথা বলার অধিকার রয়েছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৩৯০)

অক্ষম ঋণগ্রহীতা অবকাশ পাবে : কোরআনে অক্ষম অপারগ ঋণগ্রহীতাকে অবকাশ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘আর ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি যদি অভাবী হয়, তাহলে তাকে সচ্ছল হওয়া পর্যন্ত অবকাশ দাও। আর যদি ঋণ মাফ করে দাও, তাহলে সেটা তোমাদের জন্য আরো উত্তম, যদি তোমরা তা জানতে।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৮০)

ঋণ পরিশোধের দোয়া : আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) তাঁকে বলেছিলেন, যদি তোমার ওপর সির (সাবির) পর্বত পরিমাণ ঋণও থাকে, তবে আল্লাহ তাআলা তোমাকে তা পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেবেন। তুমি বলো—(আরবি উচ্চারণে) ‘আল্লাহুম্মাকফিনি বিহালালিকা আন হারামিকা ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।’ (অর্থ) ‘হে আল্লাহ! তোমার হালালের মাধ্যমে আমাকে তোমার হারাম থেকে বিরত রাখো এবং তোমার দয়ায় তুমি ছাড়া অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়া থেকে আমাকে আত্মনির্ভরশীল করো।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৬৩)

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *