আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::
মহামারী করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত ভারতকে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। এনিয়ে শনিবার কমপক্ষে ৩ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় সংহতি প্রকাশ করে ভারতের পাশে দাঁড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান করোনা ভাইরাসের ওয়েভের প্রেক্ষাপটে ভারতীয় জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ভারতকে রিলিফ সাপোর্ট পাঠাতে চায় পাকিস্তান।
এর মধ্যে রয়েছে ভেন্টিলেটরস, বাই পিএপি, ডিজিটাল এক্সরে মেশিন, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) এবং এ সম্পর্কিত সরঞ্জাম। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। বিবৃতিতে আরো জানানো হয়েছে, এসব রিলিফ সামগ্রী দ্রুত সরবরাহের জন্য পাকিস্তান ও ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ করতে পারে।
বিশ্বে বর্তমান টানা তৃতীয় দিনেও সর্বোচ্চ করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের দেশ ভারত। রাজধানী নয়াদিল্লিসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের হাসপাতালে একেবারেই অক্সিজেন নেই বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। পার্কিং লটের কাছে অনেকটা ফাঁকা জায়গা। সেখানেই সারি সারি চিতা সাজানো হয়েছে। একের পর এক করোনায় মৃত রোগীদের দেহ আসছে। ভারতের রাজধানীর এমন ছবি দেখে শিউরে উঠেছিল দেশবাসী।
জ্বলছে চিতা তবুও মৃত্যুর সংখ্যা থামছেনা। দেহ দাহ করার জায়গা নেই, কবরস্থানগুলোও ভরে গণকবর খোঁড়া হচ্ছে। ঠিক এমনই পরিস্থিতি এখন নয়াদিল্লিতে। আবারও একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড করল দিল্লি।
এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি তার অফিসিয়াল টুইটারে বলেছেন, সবার আগে মানবতা। একই সঙ্গে ভারতের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।তিনি বলেছেন, আমাদের প্রতিবেশী এবং বিশ্বে যে যেখানে ভয়াবহ এই করোনা ভাইরাসে ভুগছেন তাদের জন্য প্রার্থনা করছে পাকিস্তান, যেন তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
ইমরান খান আরো বলেন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সঙ্কটের বিরুদ্ধে সব দেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে মানবতা নিয়ে কাজ করতে হবে। এদিকে ভারতের পরিস্থিতিতে পাকিস্তানি নাগরিকরাও রালী করেছেন। তারা ভারতের এ অবস্থায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ভারতের বিভিন্ন হাসপাতাল, বিশেষ করে রাজধানী দিল্লিতে অক্সিজেনের জন্য চলছে হাহাকার। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, ‘দয়া করে আমাদেরকে অক্সিজেন দিয়ে সহায়তা করুন। এখানে এক ট্রাজেডি ঘটতে চলেছে।’ ওদিকে ভারত সরকার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে তা সামরিক বিমান ও ট্রেনের মাধ্যমে দিল্লিতে পৌঁছাচ্ছে। টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে, দিল্লির বাত্রা হাসপাতাল থেকে একটি এসওএস বার্তা পাঠানো হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, ওই হাসপাতালে ২৬০ জন রোগী আছেন। তাদের জন্য মাত্র ৯০ মিনিট বা দেড় ঘন্টার অক্সিজেন সরবরাহ আছে। এরপরই সেখানে একটি অক্সিজেহনবাহী ট্রাক পৌঁছাতে দেখা গেছে।
ভারতের এমন ভয়াবহতায় শুক্রবার পাকিস্তানের সুপরিচিত জনহিতৈষী আবদুল সাত্তার ইদহির ছেলে এবং ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ফয়সাল ইদহি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন।
ভারতে যে ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে তা আরো বিপজ্জনক এ কারণে যে, এ দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের বসবাস। এখানে প্রতি একটি রুমে কখনো কখনো ৬ জন করে মানুষ বসবাস করেন।