ডায়েলসিলেট ডেস্ক :: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোর বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদনে অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সিনেটের একটি তদন্ত কমিটি। ফলে বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন বোলসোনারো। ওই প্রতিবেদনে বোলসোনারোর বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়াসহ নয়টি অপরাধের জন্য তাকে অভিযুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়।

মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি ১ হাজার ৩শ পৃষ্ঠার। বিরোধী দলের নিয়ন্ত্রিত কমিটির এই প্রতিবেদন তৈরি করতে ছয় মাস সময় লেগেছে। আরও ৭৭ ব্যক্তি এবং দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধেও অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ব্রাজিলে ৬ লাখের বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন। বিশ্বে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই ব্রাজিলের অবস্থান। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিষয়ে উদাসীন ছিলেন বোলসোনারো। দেশজুড়ে সামাজিক দূরত্ব, বিধিনিষেধ এবং মাস্ক পরারও বিরোধী ছিলেন তিনি। নিজে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও এ বিষয়ে কঠোর কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি। এমনকি ভ্যাকসিনেরও বিরোধিতা করে আসছেন এই ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট।

করোনাভাইরাস সম্পর্কে ভুল চিকিৎসা পদ্ধতি এবং ভুল তথ্য প্রকাশের অভিযোগও রয়েছে বোলসোনারোর বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে তাকে জনসমাবেশে মাস্ক ছাড়াই অংশ নিতে দেখা গেছে। এসব নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলেও নিজের জায়গায় অনঢ় ছিলেন তিনি।

ব্রাজিলে বহু মানুষের মৃত্যুর পেছনে বোলসোনারো দায়ী কিনা সে বিষয়ে তদন্ত করেন সিনেটের ১১ সদস্যের একটি প্যানেল। রিপোর্টে, ভণ্ডামি এবং অপরাধে উসকানি দেওয়া থেকে শুরু করে জনগণের অর্থের অপব্যবহার এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে বোলসোনারোকে অভিযুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়।

প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। অ্যামাজন রাজ্যের গভর্নর উইলসন লিমার বিরুদ্ধে তার রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খামখেয়ালির অভিযোগ আনা হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে ওই রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহের ঘাটতির কারণে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে ফেডারেল সরকারের তদন্তের অধীনে রয়েছে উইলসনের রাজ্য সরকার।

এদিকে বোলসোনারোর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিরুদ্ধে তার কার্যালয় থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে তার ছেলে সেন ফ্লাভিও বোলসোনারো এই প্রতিবেদনকে আইনগতভাবে দুর্বল এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন।

এম/এ

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *