স্পোর্টস ডেস্ক::বিশ্বকাপে টানা ৫ ম্যাচে হার। এরপর দেশে ফিরে পাকিস্তানের বিপক্ষেও টি-টোয়েন্টি সিরিজেও পরাজয়ের বৃত্তে বন্দি টাইগাররা। দুই ম্যাচ হেরে এরইমধ্যে সিরিজ খুইয়েছে। আজ তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে হোয়াইটওয়াশের লজ্জার সামনে। দেশের মাটিতে সবশেষ ২০১৮তে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল টাইগাররা। বলতে গেলে ৩ বছর পর ফের দেশের মাঠে আরেকটি হোয়াটওয়াশের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। একের পর এক হারে দলের আত্মবিশ্বাস তলানিতে। এমন পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোই যে বড় ব্যাপার।অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সামনে শেষ চ্যালেঞ্জ ধবল ধোলাই ঠেকানোর। হতে পারে আজই বাংলাদেশ ক্রিকেটে তার নেতৃত্বে শেষ দিনও! বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পরই তার নেতৃত্ব হারানোর কথা। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার ইনজুরিতে থাকায় এই যাত্রায় রক্ষা পান। সেই সঙ্গে সুযোগ পান দেশের মাটিতেই স্বসম্মানে অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর। তাই পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচ অধিনায়কের জন্য জয় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এমন ম্যাচে দলকে হারের বৃত্ত থেকে বের করতে পারলে অন্তত সান্ত্বনাটুকু নিয়ে বিদায় নিতে পারবেন। তবে এজন্য দলের পারফরম্যান্সটাও প্রয়োজন। বিশেষ করে ক্রমাগত ব্যাটিং ব্যর্থতা টাইগারদের একের পর এক হারের কারণ। তাই মাহমুদুল্লাহও এমন একজন ব্যাটারের অপেক্ষাতে যে কিনা দলের পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙবে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের মতো দলের জন্য একজন সেট ব্যাটার প্রয়োজন যে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবে। অনুশীলনে ছেলেরা ক্যাচ ধরার ক্ষেত্রে প্রচুর প্রচেষ্টা দেখাচ্ছে কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা সুযোগগুলো মিস করছি। আমি মনে করি গত ৫-৬ মাসে আমাদের বোলিং দুর্দান্ত হচ্ছে, পেস ও স্পিন দুই বিভাগেই। এখন ব্যাটিং বিভাগের সেরাটা দিতে হবে।’
বিশ্বকাপে হারের পেছনে প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই দায়ী ব্যাটাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও একই হাল। প্রথম ম্যাচে টেনেটুনে ৭ উইকেট হারিয়ে করে ১২৭ রান। হারে ৫ উইকেটে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে ১০৮ রানে থামে হাতে ৩ উইকেট অক্ষত রেখেই। বিশেষ করে টপ অর্ডারের দুই ওপেনারের ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এরপর মাঝে একটু লড়াই হলেও শেষটা হয়েছে যাচ্ছেতাই। এরইমধ্যে প্রথম দুই ম্যাচ খেলা ওপেনার সাইফ হাসানকে দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে জায়গা দেয়া হয়েছে পারভেজ হোসেন ইমনকে। এ ছাড়াও দলে ফেরানো হয়েছে পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বিকেও। মোস্তাফিজুর রহমানের চোটের কারণে জায়গা হয়েছে রাব্বির। তামিম ইকবাল, লিটন দাস ও সৌম্য সরকার তো দলে নেই। তার পরিবর্তে টি-টোয়েন্টি ফরমেটে নামটি ইমনই হতে পারতো। কিন্তু বিস্ময়করভাবে তাকে উপেক্ষা করে পাকিস্তান সিরিজের দলে সাইফ হাসানকে নেয় বাংলাদেশ। ডানহাতি এই ওপেনারের ব্যর্থতার পর অবশেষে তৃতীয় ম্যাচে দলে ডাকা হয়েছে এই তরুণ ওপেনারকে। দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। বিশ্বকাপেও বদল হয়নি সেই চিত্রের। এবার দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে কোনোমতে ১ রান করা সাইফ দ্বিতীয় ম্যাচে ফেরেন প্রথম বলেই। দুই ম্যাচেই বাজে শট খেলে আউট হন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ। উদ্বোধনী জুটিতে আপাতত বাংলাদেশের বাজি হতে পারেন গত যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ইমন। ১৯ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান এখন পর্যন্ত ২৪ ম্যাচে ২৪.৪৭ গড়ে করেছেন ৫৬৩ রান। এক সেঞ্চুরির পাশে ফিফটি দুটি। স্ট্রাইক রেট ১২৩.৭৩।
অন্যদিকে দলের দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান আছেন শঙ্কাতে। ফের ইনজুরি আক্রান্ত দেশসেরা এই পেসার। শুধু তাই নয় পাকিস্তানের বিপক্ষে তারই এক ভক্ত কাঁটাতারের নেট টপকে মাঠে প্রবেশ করে বায়োবাবল ভেঙে। দৌড়ে গিয়ে সেই ভক্ত ফিজকে স্পর্শ করে ফেলেছে আরও বিপদেই। তাই আজ ফিজকে করাতে হয়েছে করোনা টেস্টও। এর আগে শনিবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিজের তৃতীয় ওভার অসমাপ্ত রেখে মাঠ ছাড়েন মোস্তাফিজুর রহমান। পরে বিসিবি জানায়, শরীরের এক পাশে ব্যথা অনুভব করছিলেন তিনি। গতকাল তার পরিস্থিতি আবার পরীক্ষা করে বাঁহাতি এই পেসারের খেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি। তার খেলা নিয়ে সংশয়ের কারণেই হয়তো ডাক পেয়েছেন কামরুল। দেশের হয়ে এখনো পর্যন্ত ৭টি টেস্ট খেললেও সাদা বলের ক্রিকেটে এখনো খেলা হয়নি তার। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে তার রেকর্ড খারাপ নয়। ৬৮ ম্যাচে ২১.২৭ গড়ে নিয়েছেন ৮০ উইকেট। ওভার প্রতি দিয়েছেন ৮.৩৮ রান করে। গেল মে-জুনে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ টি-টোয়েন্টিতে ২৫ উইকেট নিয়ে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ৯ ম্যাচে ১৬ উইকেট নিয়ে তিনি ছিলেন তৃতীয় সেরা উইকেট শিকারি কামরুল ইসলাম রাব্বি।

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *