ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পাকস্থলীতে প্রতিবার রক্তক্ষরণের সময় তিনি মৃত্যুর মুখে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক দলের সদস্যরা এ কথা বলেন।

 

সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক দলের প্রধান ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ হয়নি। তিনি এখন স্টেবল আছেন। তবে প্রতিবার রক্তক্ষরণের সময় মৃত্যুর মুখে যাচ্ছেন তিনি। চিকিৎসকরাও এখন অসহায় বোধ করছে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি ম্যাডামের যদি পুনরায় পাকস্থলীতে রক্তক্ষরণ হয় তাহলে সেটা বন্ধ করার মতো সাপোর্টিং টেকনোলজি আমাদের এখানে নেই। সে ক্ষেত্রে ওনার যদি আবার রক্তক্ষরণ হয়, তাহলে মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।’

 

এ সময় ডা. শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আমাদের শরীরে দুটি সার্কুলেশন সিস্টেম আছে। একটা হলো পোর্টাল সার্কুলেশন সিস্টেম, আরেকটা সিস্টেমিক সার্কুলেশন সিস্টেম। লিভারে দুটা সিস্টেমই কার্যকর। লিভারে টোটাল যে ব্লাড যায় তার তিন ভাগের এক ভাগ যায় সিস্টেমিক সার্কুলেশন থেকে আর দুই ভাগ যায় পোর্টাল সার্কুলেশন থেকে। এখানে যেটা হয় তার পোর্টাল প্রেসার বেড়ে গেছে। কারণ তার লিভারের ভেতরের নরমাল চ্যানেলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে কারণে পোর্টাল প্রেসার বেড়ে যায়, আর যেসব ব্যান খাদ্যনালীতে থাকে, সেগুলো ফুলে ওঠে ফেটে যায়। সেজন্য সিভিআর ব্লিডিং হয়।

 

এই সিচুয়েশনে আমরা যেটা করেছি সেটা ইন্টারন্যাশনাল প্রাকটিস। এটার পরে আবার ব্লিডিং হলে আরও কিছু জিনিস আছে যেগুলো আমরা করি, স্পেশাল কিছু কেমিক্যাল এজেন্ট আছে সেগুলো ইনজেক্ট করি অনেক সময়। আনফরচুনেটলি সেটা আমাদের দ্বারা সম্ভব হয়নি এবং এখন আমাদের দেশে সেই ওষুধগুলো পাওয়া যায় না।’

 

চিকিৎসক বলেন, ‘তৃতীয়ত যেটা আছে সেটা হলো টিপস। লিভারের ভেতরে টোটাল প্রেসার কমানোর জন্য সিস্টেমিক সার্কুলেশন এবং পোর্টাল সার্কুলেশনের মধ্যে একটা কমিউনিকেশন করে দেওয়া। এটা একটা হাইলি টেকনিক্যাল কাজ। এটা সচরাচর হয় না। আমাদের দেশে আমি দেখিনি কোনো টিপস করা রোগী এসেছে। রোগীদের দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার ব্লিডিং হলে সার্ভাইভ করা কঠিন হয়ে যায়। সেজন্য এ সেন্টারগুলো মেইনলি আমেরিকা ও ইউরোপে হয়। বিশেষত ইউকে, জার্মানি এবং ইউএসএ। ওইসব দেশে এগুলোর জন্য অ্যাডভানস সেন্টার আছে। তবে সেসব দেশেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে নেই। দুই-চারটা সেন্টার আছে। বিশ্বের সব রোগীরা সেসব সেন্টারে যায়।’

 

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, প্রফেসর ডা. একিউ এম মহসিন, প্রফেসর ডা. নূর উদ্দিন, ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আল মামুন প্রমূখ।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *