ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভকে বিচ্ছিন্ন করা এবং সেখানে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় সেনাদের রসদপত্রের সরবরাহ বন্ধে রাজধানীর চারপাশ ঘিরে করিডোর তৈরি করছে রুশ সেনারা। তবে রাজধানীর ভেতরে রুশ সেনাদের প্রবেশ ঠেকাতে লড়াই অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।
সোমবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এ তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার।
ভাষণে হান্না বলেন, ‘শত্রুরা কিয়েভের চারদিক ঘিরে ফেলছে। রাজধানীতে ঢোকার সড়কগুলো বন্ধ করে করিডোর তৈরি করছে তারা।’

‘তবে কিয়েভে আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর লড়াই অব্যাহত আছে। আগ্রাসীদের প্রতিহত করতে আমদের সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও বিশেষ বাহিনীর সেনারা মরণপণ লড়াই করে যাচ্ছেন। রাজধানীর সাধারণ বেসামরিক মানুষও এই লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে।’

‘আমার মনে হয়, আমাদের প্রত্যেকেরই প্রকৃত সত্য সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত। আর সেটি হলো— শত্রুরা কিয়েভ দখল করতে চায় এবং তারা এই লক্ষ্য সহজে ছাড়বে না। কারণ তারা জানে, কিয়েভ দখল করা মানে পুরো ইউক্রেনের দখল নেওয়া।’

এদিকে, সোমবার ইউক্রেন সেনা বাহিনীর কিয়েভ শাখার প্রশাসনিক দপ্তর রাজধানীর সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। সংক্ষিপ্ত সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কিয়েভের শহরতলি বা প্রান্তিক এলাকা বুচা, ইরপিন, হোস্তোমেল ও মাকারিভ এবং রাজধানীর সংলগ্ন শহর জেতোমিরের পশ্চিমাঞ্চল ও ভিশোরোদের উত্তরাঞ্চলে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এসব এলাকায় বেশ কয়েকদফা গোলা ছুড়েছে রুশ সেনারা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের একটি দল সোমবার ভিশোরোদের উত্তরাঞ্চল পরিদর্শন করেছে। সেখানে একটি ভবনও অক্ষত অবস্থায় নেই বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।
ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনকে চাপে রাখতে দুই মাস ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি।
পরে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। এর দু’দিন পর, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গত ২৬ মার্চ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশটির সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ’স মেইন অপারেশনস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান সের্গেই রুডস্কয় এক সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে বলেন, ইউক্রেনে চলমান রুশ অভিযানের মূল লক্ষ্য দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে (ডনবাস অঞ্চল) স্বাধীন করা এবং ইতোমধ্যে অভিযানের প্রাথমিক পর্যায় শেষ করেছে রুশ বাহিনী।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *