ডায়ালসিলেট ডেস্ক:দেশের প্রথম নগরী হিসেবে সিলেটে শুরু হয়েছে ফ্রি ওয়াইফাইয়ের কার্যক্রম। এ নগরীর ৬২টি পয়েন্টে ১২৬টি অ্যাকসেস পয়েন্টের মাধ্যমে বিনামূল্যের এই ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হচ্ছে। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অধীনে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ফ্রি ওয়াইফাই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি।

জানা গেছে, সিলেটকে সম্পূর্ণ ‘ডিজিটাল’ হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার। এ লক্ষে বর্তমানে ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্প’ বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এই বৃহৎ প্রকল্পের আওতায় সিলেট মহানগরীতে ফ্রি ওয়াইফাই সংযোগ প্রদান করা হয়েছে।

‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ প্রকল্পের সাথে জড়িতরা জানিয়েছেন, নড়াউা আগে কোন কোন স্থানে ওয়াইফাই রাউটার বসানো হবে, এ নিয়ে শুরুতে করা হয় সার্ভে (জরিপ)। পরে প্রকল্পের আওতায় সিলেট নগরীতে ফ্রি ওয়াইফাই সংযোগ স্থাপনের কাজ শুরু হয়।

এ কাজে টেন্ডার (দরপত্র) আহবান করা হয়। উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নিয়ে নগরীতে ওয়াইফাই সংযোগ চালুর কাজ পায় ‘আমরা নেটওয়ার্ক’ নামক প্রতিষ্ঠানে।

‘ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্প’র উপ-প্রকল্প পরিচালক মধুসুদন চন্দ সিলেটভিউকে জানান, আমরা নেটওয়ার্ক ওয়াইফাই সংযোগ চালুর কাজ করেছে। তবে এ কাজে রাউটার, ক্যাবল প্রভৃতি সরঞ্জাম আনা হয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের কাছ থেকে।

এই প্রকল্প কর্মকর্তা সিলেটভিউকে আরো জানান, সিলেট নগরীর ৬২টি পয়েন্টে ওয়াইফাই রাউটার বসানো হয়েছে। এসব রাউটারের মাধ্যমে ১২৬টি অ্যাকসেস পয়েন্ট রয়েছে। যে কেউ নিজের মোবাইল ফোনের ওয়াইফাই অন করার পর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ লেখা ইউজার নেম পাওয়া যাবে। এই ইউজার নেমে ক্লিক করে ‘joybangla’ (জয় বাংলা) পাসওয়ার্ড দিলেই সংযোগ চালু হয়ে যাবে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে সিলেটে ফ্রি ওয়াইফাইয়ের ইউজার নেম ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এবং পাসওয়াড ‘জয় বাংলা’ দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, সিলেটে ফ্রি ওয়াইফাইয়ের প্রতিটি অ্যাকসেস পয়েন্টে ‘ডেডিকেটেড’ স্পিড ১০ এমবিপিএস (প্রতি সেকেন্ডে ১০ মেগাবাইট)। প্রতিটি অ্যাকসেস পয়েন্টে ৫০০ জন মানুষ সংযুক্ত হতে পারবেন। তবে একসাথে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারবেন সর্বোচ্চ ২০০ জন। পুরো বিষয়টি ঢাকাস্থ নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

এদিকে, ফ্রি ওয়াইফাই সংযোগ কার্যক্রম এক বছর দেখভাল করবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অধীনস্থ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। এরপর পুরো প্রকল্প সিলেট সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন ও এক বছর দেখভাল (মেইনটেইন্যান্স) কার্যক্রমসহ এই ফ্রি ওয়াইফাইয়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের উপ-পরিচালক মধুসুদন চন্দ।

এদিকে, ফ্রি ওয়াইফাই দিয়ে কোনো ধরনের ‘খারাপ’ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। তারা জানান, বাংলাদেশে যেসব ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ, সেগুলোতে প্রবেশ করা যাবে না। এছাড়া সময়ের সাথে সাথে ‘রেস্ট্রিকডেট’ (নিষিদ্ধ) ওয়েবসাইটের তালিকা হালনাগাদ করা হবে বলেও তারা জানিয়েছেন।

এছাড়া ওয়াইফাইয়ের সংযোগ কিংবা গতি (স্পিড) নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তা যাতে তিনি জানাতে পারেন, সেই চিন্তা থেকে একটি হটলাইন চালুর পরিকল্পনা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া এ ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও একটি পেইজ খোলা হচ্ছে।

ফ্রি ওয়াইফাইয়ের উপ-প্রকল্প পরিচালক মধুসুদন চন্দ সিলেটভিউকে জানান, গত ১০ মার্চ থেকে সিলেটে অনানুষ্ঠানিকভাবে ফ্রি ওয়াইফাই সংযোগ চালু হয়েছে। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এটি শুরু হবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *