আন্তর্জাতিক ডেস্ক::   বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট মহামারী আরও বেগবান হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে হুশিয়ার করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোভিড-১৯ রোগে এ পর্যন্ত তিন লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এতে মারা গেছেন সাড়ে ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া প্রথম ব্যক্তি থেকে শুরু করে এই সংখ্যা এক লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ৬৭ দিন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এখনও এর গতিপথ পাল্টে দেয়া সম্ভব। কোভিড-১৯ শনাক্তের পরীক্ষা ও আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার কৌশলের ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান বিশ্ববাসীকে।

ড. টেড্রস বলেন, মানুষকে ঘরের ভেতরে থাকতে বলা এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো পদক্ষেপ ভাইরাসের সংক্রমণের গতি কমিয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কিন্তু এটি জিততে সাহায্য করবে না। জয় পেতে হলে আমাদের সুনির্দিষ্ট কৌশল গ্রহণ করতে হবে- প্রতিটি সন্দেহভাজন ব্যক্তির পরীক্ষা করতে হবে, শনাক্ত হওয়া প্রত্যেক ব্যক্তিকে আইসোলেশন ও যত্নে রাখতে হবে এবং আর তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশগুলোকে আগ্রাসী ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ডা. টেড্রস।

বিশ্বজুড়ে ব্যাপক হারে চিকিৎসা কর্মীদের আক্রান্ত হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামাদি বা পিপিই পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকার কারণেই সংক্রমণের শিকার হয়েছেন তারা। স্বাস্থ্যকর্মীরা তখনই তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারবেন, যখন তারা নিজেরা নিরাপদে থাকতে পারবেন। আমরা যদি অন্য সবকিছুই ঠিকঠাক করি; কিন্তু স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত না করি, তা হলে অনেক মানুষ মারা যাবে। কারণ যে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের সেবা দিতেন তারাই অসুস্থ।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পিপিইকে অগ্রাধিকার দেয়া এবং এর গুরুত্ব নিশ্চিত করতে এর অংশীদারদের সঙ্গে মিলে কাজ করছে। একই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে এর সংকটের বিষয়টিও তুলে ধরা হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহে জি-২০ জোটভুক্ত নেতাদের তিনি আহ্বান জানাবেন, তারা যাতে সুরক্ষা সরঞ্জামাদি উৎপাদন বাড়ায় এবং সেগুলো রপ্ততানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়।

বিশ্বে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইতালিতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৬০২ জন। সব মিলিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬০৭৭ জনে।

গত বৃহস্পতিবারের পর এই প্রথম একদিনে কমসংখ্যক মানুষ মারা গেল। ধারণা করা হচ্ছে যে, সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছিল তা কাজ করতে শুরু করেছে।

স্পেনে একদিনে মারা গেছে ৪৬২ জন, দেশটিতে এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৮২ জনে।
ফ্রান্সে নতুন করে মারা যাওয়া ১৮৬ জনসহ মোট মৃতের সংখ্যা ৮৬০ জন।মঙ্গলবার থেকে লকডাউন কঠোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শরীরচর্চার মতো কার্যক্রম কঠোরভাবে সীমিত করা হয়েছে এবং খোলাবাজার বন্ধ করা হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *