সোহেল আহমদ ::
ছবিটি একসময় ছাত্র-শিক্ষকের ফ্রেমবন্দীটা স্মৃতি হয়ে থাকবে ভাবেননি কেউই।শুক্রবার ছুটির দিন হিসেবে পড়াশুনার চাপ থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে শিক্ষকের সঙ্গে ঝরনা দেখতে গিয়েছিল একদল শিক্ষার্থী। শিক্ষকদের হয়তো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ঝরনা থেকে ফিরে পড়াশুনাতে আরও মন দেবে। তবে সব হয়তো, অকালেই থেকে গেল। জীবনের সব হিসাবনিকাশ একনিমিশেই লাশ হয়ে ফিরলেন তরুণ এই শিক্ষার্থীদের প্রাণ।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি লেভেল ক্রসিংয়ে উঠে পড়া পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের সবাই ছিলেন চট্টগ্রামের হাটহাজারীর আমানবাজারের আর অ্যান্ড জে প্রাইভেট কেয়ার নামে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।
এতে শিক্ষক, ছাত্রসহ মােট ১৮ জন মাইক্রোবাসে ছিলেন। তারা খৈয়াছড়া ঝরনায় ঘুরতে গিয়েছিলেন।ঠিক শুক্রবার দুপুর বেলা সোয়া ১টার দিকে সেখান থেকে ফেরার পথে মীরসরাইয়ের বড়তাকিয়া রেলস্টেশন এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মুহূর্তেই থমকে যায় স্বপ্নবাজ সেই তরুণদলের জীবন। অবশেষে তাদের হাজারো স্বপ্নের ইতি ঘটলো ট্রেনের ধাক্কায়। পাড়ি জমাতে হলো না ফেরার দেশে।
ঠিক যাত্রার পূর্বে ছাত্র-শিক্ষক একই ফ্রেমে বন্দী হবে তবে কে জানে এই ফ্রেমবন্দীটা একসময় স্মৃতি হয়ে থাকবে তা কখনো কল্পনাও করেননি কেউই।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রেনের ধাক্কায় পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক মোস্তফা মাসুদ রাকিব (২৮), জিয়াউল হক সজীব (২৮), রিদোয়ান চৌধুরী (৩১) ও ওয়াহিদুল আলম জিসান (৩২)। শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশাম (১৮), আয়াত (১৮), মারুফ (১৭), তাসফির (১৮) ও হাসান (১৯)। নিহত অন্যজন হলেন- মাইক্রোবাস চালক গোলাম মোস্তফা (৩৫), তিনি হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডী এলাকার বাসিন্দা।
এ ঘটনায় আহতাবস্থায় বাকি ছয়জনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আহতরা হলেন- তাছমীর পাভেল (১৬), মো. মাহিম (১৮), মো. সৈকত (১৮), তানভীর হাসান হৃদয় (১৮), মো. ইমন (১৯) ও মাইক্রোবাসের চালকের সহকারী তৌকিদ ইবনে শাওন (২০)। তারা চমেক হাসপাতালের ২৪ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।