স্পোর্টস ডেস্ক :: শারজায় আফগানিস্তানের কাছে হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ১০-১৫ রানের আক্ষেপে পুড়েছিলেন। একই ভেন্যুতে হওয়া শনিবার রাতের ম্যাচ শেষে মোহাম্মদ নবীও সাকিবের সুরে সুর মেলালেন। অকপটে স্বীকার নিলেন, ‘বাংলাদেশ ম্যাচের চেয়ে আজকের (শনিবারের) উইকেট বেশ ভালো ও ব্যাটিং সহায়ক ছিল। গুরবাজ-ইব্রাহিম জুটি যে অবস্থানে রেখে গিয়েছিল, সেখান থেকে আরও বেশি রান হতে পারত। আমরা পারিনি।’
নবী তো বলবেনই। এবার তাঁর আফগানিস্তান যে পরাজিতের দলে! এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে শতভাগ সাফল্য নিয়ে সুপার ফোরে ওঠা আফগানরা কাল আর পেরে ওঠেনি। শেষ চারের প্রথম ম্যাচে তাদের ৪ উইকেটে হারিয়ে দুই পরাশক্তি ভারত-পাকিস্তানকে বার্তা দিয়ে রেখেছে শ্রীলঙ্কা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে রহমতউল্লাহ গুরবাজের বিধ্বংসী ব্যাটিং (৪৫ বলে ৮৪) সত্ত্বেও ১৭৫ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কা লক্ষ্য টপকে গেছে ৫ বল বাকি রেখে।
দুবাইয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিপক্ষে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচের পর পেয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাসটা শারজার বিশেষ রেকর্ডের দিনেও টেনে এসেছে টুর্নামেন্টের আয়োজন স্বত্ব পাওয়া শ্রীলঙ্কা। গত রাতের লড়াই দিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আন্তজার্তিক ম্যাচ (২৮১) আয়োজনের কীর্তি গড়েছে আরব আমিরাতের ভেন্যুটি। ছাড়িয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডকে (২৮০)। ম্যাচটি জিতে আফগানদের বিপক্ষে এশিয়ান দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করার রেকর্ড গড়েছে লঙ্কানরা। সঙ্গে গ্রুপ পর্বে রশিদ খান-মুজিব ইর রহমানদের কাছে ৮ উইকেটে বিধ্বস্ত হওয়ার বদলা নিয়ে ফেলেছে তারা।
লক্ষ্য ছুঁতে নেমে গুরবাজদের মতো কেউ বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন ৪ জন—দুই ওপেনার পাথুম নিশানকা-কুশল মেন্ডিস এবং দানুশকা গুনাথিলাকা আর ভানুকা রাজাপক্ষে। তাঁদের মধ্যে ভানুকা ছিলেন সবচেয়ে ভয়ংকর। ১৪ বলে ৩১ রান করে ম্যাচটা লঙ্কানদের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন তিনি। পরে তাতে ‘সমাপ্তির ছোঁয়া’ দেন দুই অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও চামিকা করুণারত্নে।
এর আগে ১৫ ওভার শেষে ১ উইকেটে ১৩৮ রান তুলে ফেলা আফগানদের রান-বন্যায় শেষ ৫ ওভারে লাগাম টেনেছেন আসিথা ফার্নান্দো-মহেশ থিকশানারা। শেষ ৩০ বলে ‘মাত্র’ ৩৭ রান দিয়েছেন তাঁরা। ম্যাচ শেষে তাই সতীর্থ ব্যাটারদের চেয়ে বোলারদেরই প্রশংসায় ভাসিয়েছেন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা, ‘ডেথ ওভারে বোলারা পরিকল্পনামাফিক বোলিং করেছে। এরপরেই ড্রেসিং রুমে এমন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল, যেন আমরা যেকোনো লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারি।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান : ২০ ওভারে ১৭৫/৬; গুরবাজ ৮৪, মাদুশাঙ্কা ২/৩৭
শ্রীলঙ্কা : ১৯.১ ওভারে ১৭৯/৬; কুশল ৩৬, মুজিব ২/৩০
ফল : শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা : গুরবাজ (আফগানিস্তান)

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *