আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ

স্পোর্টস ডেস্ক :: একই সময়ে নারী-পুরুষ দলকে ঘিরে দুই রকম দৃশ্য। সাফের সাফল্যে যখন সংবর্ধনা নিতে ব্যস্ত নারী ফুটবলাররা, ছেলেদের দল তখন লড়ছে হারের ব্যবধান কতটা কমানো যায় সেই লড়াইয়ে। যে দশরথ স্টেডিয়ামে এক সপ্তাহ আগে নেপালকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা, সেই একই মাঠে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কূল-কিনারাই খুঁজে পেল না পুরুষ জাতীয় ফুটবল দল!
কাঠমান্ডুর দশরথে এই বছরে নিজেদের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটায় নেপালের কাছে রীতিমতো বিধ্বস্ত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। হ য ব র ল আক্রমণ আর ভুলে ভরা রক্ষণে প্রথমার্ধেই ম্যাচ ছিটকে পড়েন জামাল ভূঁইয়ারা। সাজ্জাদ হোসেন এক গোল শোধ দেওয়ায় কিছুটা মান রক্ষা দলের। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ৩-১ গোলে হেরেছে হাভিয়ের কাবরেরার দল।
নেপালের কাছে এই হারে প্রশ্নবিদ্ধ বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কোচিংয়ের ধরন। আগের ম্যাচে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে জয় পাওয়া একাদশ থেকে তিন পরিবর্তন এনেছিলেন স্প্যানিশ কোচ। ডিফেন্সে তারিক কাজীর পরিবর্তে রিমন হোসেনকে সুযোগ দেন কাবরেরা। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদের পরিবর্তে খেলেছেন হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস। আক্রমণে সুমন রেজার জায়গায় খেলেছেন সাজ্জাদ হোসেন। সাজ্জাদ এই ম্যাচেই তার প্রথম আন্তর্জাতিক গোল পেয়েছেন বটে কিন্তু সুযোগ নষ্ট করেছেন তার চেয়ে বেশি।
কাবরেরার স্প্যানিশ ঘরানার ‘বিল্ডআপ’ ফুটবল খেলতে খাবি খেলেন ফুটবলাররা। বলের দখল তো দূরে থাক, প্রতিপকে উল্টো ভুল পাসে আক্রমণ গড়ার সুযোগ গড়ে দিলেন। আগ্রাসী খেলতে গিয়ে নিজেদের অর্ধে ডিফেন্ডাররা করে বসলেন একের পর এক ফাউল। বাংলাদেশের ‘অ্যাকিলিস হিল’ সেট পিস থেকেই দুই গোল আদায় করেছে নেপাল।
কম্বোডিয়া যাওয়ার আগে এই সেট পিসকেই নিজেদের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা বলেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ভুল শোধরাতে ফুটবলাররা পেয়েছিলেন এক মাসের বেশি সময়। এই এক মাসে আসলে কতটা উন্নতি হয়েছে দলটার সেই প্রশ্ন যেমন থেকেই যায়, কাবরেরার দর্শনে ফুটবলারদের খেলার ধরনটাও এখন তীর্যক প্রশ্নে প্রশ্নবিদ্ধ।
দশরথে ম্যাচের প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল বাংলাদেশই। ১৬ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি-কিক ক্রস বারে লাগলে আবারও গোলবঞ্চিত হয় বাংলাদেশ।
অতিথিরা না পারলেও নিজেদের সুযোগটা ঠিকই কাজে লাগিয়েছে নেপাল। ১৮ মিনিটে বিমল ঘারতি মাগারের ফ্রি-কিক থেকে অঞ্জন বিস্তার হেডে বল বাংলাদেশ গোলরক্ষক জিকো ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে।
২৭ মিনিটে ম্যাচে নিজেদের দ্বিতীয় গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। বক্সের ভেতর থেকে তেজ তামাংয়ের শট প্রথম দফায় ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক জিকো। জিকোর ফিস্টে বল পান ফাঁকায় দাঁড়ানো অঞ্জন বিস্তা। অঞ্জনের শটে দ্বিতীয় দফায় আর জাল রক্ষা করতে পারেননি জিকো।
বাংলাদেশকে লজ্জায় ডুবিয়ে ৩৮ মিনিটেই হ্যাটট্রিক অঞ্জন বিস্তার। এবারও গোল সেই ফ্রি-কিক থেকে। বিশাল রায়ের ৩৫ গজ দূর থেকে নেওয়া স্পটকিকে বক্সের ভেতরে কেবল অঞ্জনই ছিলেন। অঞ্জনের মার্কার হিসেবে ছিলেন টুটুল হোসেন বাদশা। তাঁকে ছিটকে দিয়ে অঞ্জনের হেড ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় বাংলাদেশকে।
দ্বিতীয়ার্ধে চিরচেনা প্রতি আক্রমণ ফুটবলে ফেরেন ফুটবলাররা। তাতেই আসে ম্যাচের এক মাত্র সাফল্য। ৫৫ মিনিটে এসে ব্যবধান কমায় বাংলাদেশ। ডান প্রান্ত থেকে রাকিব হোসেনের ক্রস থেকে বল সেসাং আংডেম্বের পায়ে লাগলে ফাঁকায় বল পান সাজ্জাদ হোসেন। খোলা পোস্টে এবার ভুল করেননি সাজ্জাদ। হেডে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক গোলে ব্যবধান কমান এই স্ট্রাইকার।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *