নুনু মিয়াকে কটুক্তি
ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: ফেসবুকে লাইভের মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়াসহ একাধিক ব্যক্তিকে কটুক্তির অভিযোগে সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়েছে। মামলায় পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনকে আসামি রাখা হয়েছে (সাইবার মামলা নং-১৬০/২০২৩ইং)।
বুধবার সিলেট সাইবার ট্রাইনাল আদালতে ওই মামলাটি দায়ের করেছেন বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. নুরুল হক। তিনি পৌর শহরের পার্শবর্তি জানাইয়া (দক্ষিণ-মসুলা) গ্রামের হাজী আব্দুল আলীর ছেলে। ওইদিন (বুধবার) দুপুরে মামলার শুনানী শেষে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ মনির কামাল মামলাটি তদন্তের জন্য সিলেটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ‘পিবিআই’কে দায়িত্ব প্রদান করেছেন। অভিযুক্ত মেয়র মুহিবুর রহমান রামপাশা রোড বিশ্বনাথ নতুন বাজারের বাসিন্দা। এর আগে তিনি দু’বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠামণ্ডলীর সদস্য ও বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিশ্বনাথ পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান তাঁর ‘Mayar Mohibur Rahman’ (মেয়র মুহিবুর রহমান) নামীয় ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করে নুনু মিয়ার মানহানী করে যাচ্ছেন। তিনি নুনু মিয়াসহ বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে একাধিক লাইভ করেছেন। তাঁর লাইভে তিনি বলেছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়া ‘ওয়ান ইলেভেন’র (১/১১) সময় নির্যাতিত না হয়েও নির্যাতিত হওয়ার কথা বলে ফায়দা হাসিল করেছেন।
অন্য একটি লাইভে মেয়র বলেছেন, তিনি (মেয়র) তাকে (নুনু মিয়াকে) তার কর্মী বললেও ভুল করবেন। কারণ নুনু মিয়া তার (মেয়র) বাসায় কাজ করতেন আর তার হাত-পা ও শরীর টিপে দিতেন। এভাবে মাল সাহেবেরও (সাবেক অর্থ-মন্ত্রী) হাত-পা ও শরীর টিপে দিতেন। আর আবুল মাল সাহেবের হাত-পা টিপে টিপে একসময় নৌকা প্রতীক নিয়ে কেন্দ্র দখল করে উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে যান নুনু মিয়া। আর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সরকারি বরাদ্দ গভীর নলকূপ দেবার নাম করে জনগণের টাকা চুরিসহ উপজেলায় নানা দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। এভাবে মামলার বাদী নুরুল হক, পুলিশ ও সরকারী কর্মকর্তাসহ যে কারো বিরুদ্ধে অভিযুক্ত মেয়র মানহানিকর বক্তব্য লাইভে উপস্থাপন করে যাচ্ছেন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ মোশাহিদ আলী ও আজিজুর রহমান সুমন বলেন, বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সিলেট সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন নুরুল হক নামের এক ব্যক্তি। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠাতে সিলেট ‘পিবিআই’কে দায়িত্ব প্রদান করেছেন ওই আদালতের বিচারক।
মামলার বাদী নুরুল হক বলেন, মেয়রের মিথ্যা ও মান হানিকার বক্তব্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে এবং উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়ার সম্মানহানি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। যে কারণে ন্যায়বিচার পেতে তিনি মামলা দায়ের করেছেন।
বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান বলেন, সরকারি বরাদ্দ দেবার নামে জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন নুনু মিয়া। এরপর টাকা ও বরাদ্দ কোনোটাই পাচ্ছেন না জনগণ। যে কারণে গত ২২ আগস্ট নুনু মিয়া ও তার পিএস দবির মিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ৪ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলা করেছেন জামাল আহমদ নামের এক ভুক্তভোগী। কাজেই নুনু মিয়ার টিউবওয়েল বাণিজ্যের সাথে জড়িত ওই মামলার বাদী। তিনি জনগণের পক্ষ নিয়েছেন বলেই তার নামে মামলা করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।