প্রকাশিত: ৯:২৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১২, ২০২৫
সোহেল আহমদ :: রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ফিলিস্তিনি পতাকায় মুখরিত ছিল সারা বাংলাদেশ। মিছিলে মিছিলে বাংলাদেশের গর্জন শুনলো সারা বিশ্ব। এমন বাংলাদেশকে এরকম দেখেনি কেউই । কোটি কোটি মানুষের বিক্ষোভে আর শ্লোগানে মুখরিত হয় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ দেশের বিভিন্ন জেলা। মার্চ ফর গাজা ঐতিহাসিক ঘোষণা তুলে ধরা হয় ৫দফা সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সেখানে লাখো লাখো মানুষের উপস্থিতিতে শ্লোগানে আর ফিলিস্তিনির পতাকায় ছেয়ে যায় পুরো উদ্যানটি। জনসমুদ্রে পরিণত হয় সমাবেশটি। যেন মনে হলো নিপীড়িত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার গর্জন। দেশের মানুষ শ্লোগানে শ্লোগানে রর্বরোচিত ইসরায়েলী ফ্যাসিস্টদেরজানিয়ে দিলো ফিলিস্তিনিবাসীদের অস্তিত্ব শুধু ভূ-খন্ডে সীমাবদ্ধ নয়, ছড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়ে।
আজ শনিবার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এ বিক্ষোভ কর্মসূচী পালিত হয় । সমাবেশের পূর্বে থেকে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে ছিলো মার্চ ফর গাজা কর্মসূচীর মিছিল।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের শুরু হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। মুফতি রেজাউল করিম আবরারের উপস্থাপনায় সেখানে বক্তব্য দেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ ও জনপ্রিয় ইসলামিক আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারীসহ অনেকে।
রাজধানীর ঐতিহাসিক শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
এর আগে রাজধানীতে আয়োজিত ঐতিহাসিক ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামায় ইসরাইলের সমর্থক কোম্পানি ও শক্তিকে বয়কটের আহবান জানান নেতারা। এসময় তারা ঘোষণাপত্রে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মুসলিম উম্মাহ, বাংলাদেশ সরকার ও সাধারণ মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেয়া হয়। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
৫দফাগুলো হলো :
১. জায়নবাদী ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করতে হবে।
২. যুদ্ধবিরতি নয়—গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ও সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৩. ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী ভূমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে হবে।
৪. পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
৫. ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করতে হবে। কারণ, এই মুহূর্তে বিশ্বব্যবস্থা যে ন্যায়ের মুখোশ পরে আছে, গাজার ধ্বংসস্তূপে সেই মুখোশ নির্লজ্জভাবে খুলে পড়ে গেছে।
সেহেতু, আমরা বাংলাদেশের সরকারের প্রতি দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাই—১. বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘এক্সেপ্ট ইসরায়েল’ শর্ত পুনর্বহাল করা, ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার অবস্থান আরো সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে হবে। ২. সরকারের ইসরায়েলি যত প্রতিষ্ঠানের সাথে যত চুক্তি হয়েছে, তা বাতিল করতে হবে।
৩. রাষ্ট্রীয়ভাবে গাজায় ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোর কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪. সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং আমদানি নীতিতে জায়নবাদী কম্পানির পণ্য বর্জনের নির্দেশনা দিতে হবে। ৫. জায়নবাদের দোসর ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের অধীনে মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানাতে হবে; যেহেতু, হিন্দুত্ববাদ আজ শুধু একটি স্থানীয় মতবাদ নয়—বরং আন্তর্জাতিক জায়নিস্ট ব্লকের অন্যতম দোসর। ৬. পাঠ্যবই ও শিক্ষা নীতিতে আল-আকসা, ফিলিস্তিন, এবং মুসলিমদের সংগ্রামী ইতিহাসকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে—
যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুসলিম আত্মপরিচয়ের সাথে গড়ে ওঠে। কারণ, রাষ্ট্র কেবল সীমানা নয়, রাষ্ট্র এক আমানত। আর এই আমানত রক্ষা করতে না পারলে ইতিহাস কাউকেই ক্ষমা করে না।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech